1. islammamun1286@gmail.com : admin :
  2. monjurtapon@gmail.com : Tapon Alokito : Monjur Elahi Tapon
  3. tofayelahammad149@gmail.com : tofayel :
হাশেম রেজার যত জালিয়াতি প্রতারণা ; প্রশাসন নিরব | বাঙ্গালীর দিগন্ত
রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫, ০২:৫৭ পূর্বাহ্ন

হাশেম রেজার যত জালিয়াতি প্রতারণা ; প্রশাসন নিরব

রিপোর্টার
  • সময় : শনিবার, ১৩ আগস্ট, ২০২২
  • ২৮৮ Time View

হাশেম রেজা? বিরল এক রহস্যে ঘেরা। সম্প্রতি তাকে নিয়ে মন্তব্য করেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ। তিনি বলেন, দৈনিক আমার সংবাদ সম্পাদক হাশেম রেজা সাংবাদিকতা পেশার উপযুক্ত নন ।
তিনি বলেছেন, দেশের শীর্ষস্থানীয় পত্রিকাগুলোর সম্পাদকদের তাদের কর্মীরা ভাই বলে সম্বোধন করলেও কথিত সম্পাদক হাশেম রেজাকে ‘স্যার’ বলতে হয়। তার ইচ্ছামতো পত্রিকা অফিস চালান। এতে বোঝা যায়, ওনার লেখাপড়ায় ঘাটতি রয়েছে। ওনার কর্মকাণ্ডই তা প্রমাণ করছে, তিনি এ পেশার উপযুক্ত নন।

গুঞ্জন আছে সর্বত্র তারেক রহমানের কানেক্টিভিটিতেই তার উত্থান শুরু, এখনো তা অব্যাহত। তবে তারেক জিয়া পরিবারের দেখভালের দায়িত্ব পালনে বিরামহীন থাকলেও মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে ক্ষমতসীন আওয়ামী লীগের একাধিক উপকমিটির পদপদবী বাগিয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন নিজ জেলা চুয়াডাঙ্গাসহ দেশের সর্বত্র। হরহামেশাই লিপ্ত আছেন ভয়-ভীতি, হামলা-মামলা আর জবর দখল করে অন্যের সম্পদ লুটে নিতে। পুলিশের এক মেধাবী ও ক্ষমতাশালী ডিআইজিকে মামা শ্বশুড় পরিচয়ে অন্যায় অপরাধ, অবৈধ ব্যবসায় আর ক্ষমতার অপব্যবহারে ছুঁটছেন লাগামহীনভাবে! দল বা রাষ্ট্রের কেউ যেন নেই সম্পাদক হাশেম রেজার এই অবৈধ ক্ষমতার লাগাম টেনে ধরার।
তিনি চলেন বিলাসবহুল গাড়িতে। প্রায়শই আবু হাশেমের গাড়িবহরে থাকে কোটি টাকার ভিন্ন ভিন্ন ব্রান্ডের গাড়ি। একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক বনে গিয়ে সরকার ও আওয়ামীলীগ থেকে নানাবিধ সুবিধা নিয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে বনে গেছেন কোটিপতি।


এখানে উল্লেখ্য যে, দৈনিক পত্রিকার সম্পাদক হতে হলে শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রয়োজন হয় ন্যূনতম স্নাতক পাস, অভিজ্ঞতা লাগে কমপক্ষে ১০ বছর। এর কোনো কিছুই ছিলো না হাশেম রেজার। এক্ষেত্রে তিনি এসএসসি, এইচএসসি এবং ডিগ্রী পাসের ৩ টি সার্টিফিকেটই অসদুপায় সংগ্রহ করার অভিযোগ রয়েছে। যাহা ইতিমধ্যে জাল বলিয়া প্রমাণিত।
পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক হয়েও ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ উপকমিটির সদস্যের পদ টাকার বিনিময়ে বাগিয়ে নেয়ার গুরুত্বর অভিযোগ আছে। ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিজের প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের বেতন না দিয়ে চাকরিচ্যুত করা তার নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার। প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে হয়রানিমুলক মামলা ও ভয়-ভীতি দেখানো নিয়মে পরিণত হয়েছে হাশেম রেজার।
সূত্র বলছে, জন্ম নিবন্ধনে নাম আবু হাশেম। দৈনিক আমার সংবাদ এর সম্পাদক ও প্রকাশক । আওয়ামীলীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক উপকমিটির সদস্য। যুবলীগের সাবেক কমিটির সহ-সম্পাদক পরিচয় দানকারি তিনি। কিন্ত যুবলীগের কোন কমিটিতে কোন ধরণের পদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। এই হাশেম রেজা নেতাদের গিফট দেন বিএমডাব্লিউ মারসিডিস গাড়ি। এছাড়াও তার গ্যারেজে ছয় কোটি টাকার বিভিন্ন মডেলের বিলাসবহুল গাড়ি পরে থাকারও ব্যাপক গুঁঞ্জন রয়েছে। কোথা থেকে আমদানি হয় এসব দামি বিলাশবহুল গাড়ি।
চুয়াডাঙ্গার কুড়ুলগাছি গ্রামে জন্ম নেওয়া এই হাশেম রেজা সম্পর্ক স্থানীয়দের কাছে জানতে চাইলে এলাকার একাধিক ব্যাক্তি বলেন, এলাকার হাশেম চিটার ঢাকায় একটি দৈনিক বর্তমান বাংলা নামে পত্রিকার বিজ্ঞাপন সংগ্রহের কাজ করার সুবাদে গুলশানের এক বিজ্ঞাপন কোম্পানির মালিককে বিয়ে করেন। এরপর থেকে প্রতারণা করে বিবাহিত দ্বিতীয় স্ত্রীর কাছ থেকে বিপুল টাকা হাতিয়ে নেয়। পরে প্রথম বউয়ের চাপে ওই মহিলাকে তালাক দিতে বাধ্য হন।

হাশেম রেজার জন্মস্থান কুড়ুলগাছি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও জামাত নেতা সরফরাজ উদ্দীনের সঙ্গে এক সাক্ষাতে তিনি বলেন, হাশেম রেজার বাবা স্থানীয়ভাবে জামাতের রাজনীতি করতেন এবং আমাদের সাথেই ছিলেন।
করাপশন মিডিয়ার একটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পরলে তা থেকে জানা যায়, ধান্দাবাজির দোকান হিসেবে দৈনিক আমার সংবাদ নামে একটি পত্রিকা শুরু করেন। এরপর সাবেক যুবলীগ নেতাকে প্রথমে অর্ধ কোটি এবং পরে আরো দুই কোটি টাকা দেন। এরপর বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকার পিএম বিটের এক সাংবাদিকের মাধ্যমে ২৫ লাখ টাকা দিয়ে আওয়ামীলীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক উপকমিটিতে সদস্য হিসেবে নাম লেখান।
দৈনিক পত্রিকার সম্পাদক ও আওয়ামীলীগ নেতার পরিচয়ে হাশেমের খুব দ্রুত সাফল্য ধরা দেয়। আর পেছনে তাকাতে হয়নি ভূয়া সার্টিফিকেট দিয়ে ডিক্লারেন্স নেয়া পত্রিকার সম্পাদক হাশেম রেজার।
হাশেম রেজার সার্টিফিকেটে দেখা যায় ১৯৯৪ সালে কুড়লগাছি স্কুল থেকে সোশ্যাল সাইন্সে দ্বিতীয় বিভাগে পাশ করেন। এরপর এইচএসসি ও ডিগ্রী পাস করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।
অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে হাশেম রেজার সব সার্টিফিকেট ভুয়া। এমনকি যিনি সার্টিফিকেটগুলো সত্যায়িত করেছেন তার পরিচয়ও ভুয়া। হাসেম রেজার কাছে অষ্টম শ্রেণী পাসের বৈধ সার্টিফিকেটও নেই । তারপরও কীভাবে সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে সে পার পেয়ে গেল?
দৈনিক পত্রিকার সম্পাদক ও ডিক্লারেশন নিতে এসব জাল সার্টিফিকেট ঢাকা জেলা প্রশাসনের কাছে জমা দিতে হয়েছে। প্রশ্ন অনেকের এসব জাল সনদে জেলা প্রশাসন ও গোয়েন্দা ছাড়পত্রই বা পেলো কিভাবে?
জালজালিয়াতির সবধরণের প্রমাণাদি সংগ্রহ করে ঢাকা জেলা প্রশাসনে একাধিকবার অভিযোগ করা করা হলেও হাশেম রেজা এই অভিযোগ পত্র গুলো গায়েব করে দেওয়ার অভিযোগ আছে অনেকের কাছে। রাজনৈতিক পরিচয় ও প্রভাব বিস্তার করে হাশেম এখন চুয়াডাঙ্গার অন্যতম সারের ডিলার। তিনি সরকারের নিকট থেকে সর্বোচ্চ সুবিধা নিয়েও সাংবাদিকদের বেতন দেন না ।
বিশ্বস্ত এক সূত্র থেকে জানা গেছে, বিদেশ থেকে শুল্কমুক্ত কাগজ এনে দেশে চড়া দামে বিক্রি করেন। কাগজে-কলমে পত্রিকার সার্কুলেশন ১ লাখ ৬০ হাজার হলেও পত্রিকা ছাপান মাত্র ৫ হাজার। বাকি কাগজ চড়া দামে বিক্রি করে দেন। সাংবাদিক নির্যাতনেও রয়েছে নিকৃষ্টতম উদাহরণ এই হাশেম রেজা। বেতন-ভাতা পরিশোধ না করায় শ্রম আদালতে তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা চলমান।
আরও এক অভিযোগে জানা গেছে হাশেম রেজার দেনা পাওনা নিয়ে কোন সাংবাদিক কথা বলতে গেলেই তার উপরে নেমে আসে নির্যাতন। দৈনিক আমার সংবাদ পত্রিকার মনির হোসেন নামে এক কম্পিউটার অপারেটরকে বেতন না দিয়ে চাকরিচ্যুত করে অহেতুক। বেতন চাইলে তার নামে চুয়াডাঙ্গাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় অন্তত চারটি মামলা করেছেন হশেম।
মামা শ্বশুড় ঢাকা রেঞ্জের শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তার ক্ষমতার দাপটে পুলিশ প্রটেকশন নিয়ে ঘোরেন এই হাসেম। সেই ডিআইজি মামা শ্বশুড় হাশেমকে পুলিশ প্রটেকশন এবং নানা ধরণের হয়রানিমুলক মামলা দিতে সহায়তা করেন বলেও জানান ভুক্তভোগি অনেকে।
আওয়ামীলীগ থেকে নমিনেশন প্রার্থী হাশেম রেজা দৈনিক আমার সংবাদের প্রধান কার্যালয় যে বিল্ডিংয়ে বছরের পর বছর ভাড়া এমন কি কোন প্রকার সার্ভিস চার্জ প্রদান ছাড়াই ভোগ দখলে রয়েছেন। যার নেপথ্যে রয়েছে তারেক জিয়া পরিবারের কানেক্টিভিটি। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সেই বিল্ডিং (৭১ মতিঝিল) ভবনটির মালিক তারেক রহমানের স্ত্রী জোবায়দা রহমানের মা ইকবাল মান্দ বানু। একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, হাশেম তাদের সুরক্ষা দেওয়ার বিনিময়ে তাদের কোন ভাড়া বা সার্ভিস চার্জ দেন না। বিদ্যমান আছে তাদের সঙ্গে ভাড়ার একটি ছুক্তিপত্রের ফরমালিটিজ। যেখানে সাক্ষর আছেন তারেকের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানসহ তিনজনের সাক্ষর রয়েছে।
প্রশ্ন করেন অনেকেই ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের ওপরে ভর করে চলা এবং প্রধানমন্ত্রীর হাতের ভেতরে হাত রেখে ছবি ফেসবুকে ঝোলানো হাশেম কিভাবে তারেক জিয়া পরিবারের সম্পত্তির সরক্ষক হলেন? একাধিক সূত্র বলে হাশেম রেজার এধরনে চতুরতার আচরণ হতে পারে আওয়ামীলীগের জন্য কোন নীলনকশা।
খোঁজ নিয়ে আরো জানা যায়, এলাকায় দাপট দেখিয়ে অনেকের জায়গা জমি দখল করেছেন। কমিশন বাণিজ্য , কিডন্যাপিং, নিয়োগ বাণিজ্য সব জায়গাতেই তার অবস্থান সক্রিয়। এসবের পিছনে তাকে ঠ্যাক দেয় সরকারদলীয় পদ-পদবী ও ক্ষমতাশালী এক শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তা।
আরেক সূত্রে জানা যায়, নিজের শালিকার সঙ্গে খারাপ কাজে লিপ্ত হয়ে বউয়ের কাছে ধরা খান বলেও এলাকায় জনশ্রুতি রয়েছে। পরে তাকে বিয়ে দেন দৈনিক আমার সংবাদ এর একাউন্টেন্ট আলামিনের সঙ্গে। এক পর্যায়ে তার শালিকার আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয় হাশেমের বউয়ের নির্যাতন নীপীড়নে।

হাশেমের কাছে থাকা দুটি আগ্নেয়স্ত্র দিয়ে এলকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। যে কোর ধরণের মামুলি ছোটখাটো বিষয়ে বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে তার থাকা আগ্নেয়স্ত্র তাক্ করে গুলি করার হুমকি দেয় যখন তখন। ইতোমধে তথ্য গোপন করে কুড়ুলগাছি মাধ্যমিক বিদ্যলয়ে সভাপতি বনে গিয়ে কর্মচারী নিয়োগ বাণিজ্য করে প্রায় ৫০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তবে এ ব্যাপরে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোন ধরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করে না করে টাকার বিনিময় কর্মচারি নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published.

আরো খবর
© All rights reserved © 2019-2021 Bangaleer Diganta
Design and Developed by Classical IT