1. islammamun1286@gmail.com : admin :
  2. monjurtapon@gmail.com : Tapon Alokito : Monjur Elahi Tapon
  3. tofayelahammad149@gmail.com : tofayel :
করোনায় ভাড়াটিয়াদের বোবাকান্না | বাঙ্গালীর দিগন্ত
মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ০৯:৩৬ পূর্বাহ্ন

করোনায় ভাড়াটিয়াদের বোবাকান্না

রিপোর্টার
  • সময় : রবিবার, ৯ মে, ২০২১
  • ৩৮৬ Time View

দেশের কর্মসংস্থানের বেশির ভাগ রাজধানী ঢাকা কেন্দ্রিক হওয়ায় বিভিন্ন অঞ্চলের লোকজন কাজের সন্ধানে রাজধানীমুখী হতেন। প্রতিদিনই কর্মসংস্থান বা ভাগ্য পরিবর্তনের আশায় ঢাকায় আসত মানুষ। এভাবে দেড় হাজার বর্গকিলোমিটারের এ নগরীর বাসিন্দার সংখ্যা দাঁড়িয়ে যায় প্রায় দুই কোটি, যাদের প্রায় ৮০ শতাংশই ভাড়া বাসার বাসিন্দা। এ ভাড়াটিয়ারা বছরের পর বছর বাসার উচ্চ ভাড়া দিয়ে আসছেন। কিন্তু করোনা ভাইরাস পরবর্তী পরিস্থিতি বদলে দিয়েছে বাসা ভাড়ার চিত্রও। করোনার কারণে অনেক মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়ছেন। আবার অনেক মানুষের শ্রেণি কাঠামোর পরিবর্তন হয়েছে। নতুন করে অনেক মানুষ হতদরিদ্র হয়েছেন, ফলে আগের ভাড়ার ভার বইতে পারছেন না তারা, ফলে ছেড়ে দিচ্ছেন বাসা। ছেড়ে দিচ্ছেন ঢাকা শহরও এবং নির্মমতার এই চিত্র যেনো ঢাকা শহরেই বেশি। কিন্তু বর্তমান সময়ের পেক্ষাপটে বাসা মালিকদের দেশের অবস্থা সম্পর্কে সব কিছু জানা সত্ত্বেও তাদের ভেতর নেই মানবিকতার বিন্দুমাত্র ছাপ। নিরূপায় হয়ে বাসা ছাড়তে হচ্ছে ভাড়াটিয়াদের
গোটা বিশ্বজুড়ে করোনা ভাইরাসের তাণ্ডবে সব কিছুই এলোমেলোভাবে ধাবিত হচ্ছে। মানুষের জীবন চলছে গতিহীন, অনিয়ম ও অগোছালোভাবে। শুধু তাই নয়, করোনা ভাইরাসের প্রভাবে মানুষের জীবনের মোড় নিচ্ছে অন্যদিকে যা ছিলো অপরিকল্পিত এবং অকল্পনীয়। এ ছাড়াও নানা রকম আতঙ্ক ও হতাশার মধ্যে দিয়ে সময় পার করছে মানুষ। তবে অবস্থান ভেদে সেগুলোর চিত্র ভিন্নরকম। করোনার এই কঠিন সময়ে কেউ হারাচ্ছেন সব থেকে কাছের মানুষ। কেউ বা কর্মহীন হয়ে পড়ছেন আবার কেউ হারাচ্ছেন মাথা গোজার ঠাঁই। নিরূপায় হয়ে শহর ছেড়ে গ্রামের বাড়িতে অবস্থান নিতে হচ্ছে তাদের। যা একজন মানুষের কাছে খুবই বেদনাদায়ক। বেকার, ভাগ্যান্বেষী, বিদ্যান্বেষীসহ নানা শ্রেণির মানুষের স্বপ্ন গড়ার শহর ঢাকা। আর এ জন্যই দিন দিন এই নগরে মানুষের বাস বাড়ছিল জ্যামিতিক হারে। কিন্তু গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা ভাইরাস হানা দেয়ার পর সেই মানুষদের স্বপ্ন যেনো ভাঙতে শুরু করেছে।

গত একটি বছরে আয় রোজগার কমে এমনকি কর্মস্থান হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে নিম্ন-মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষগুলো। হতদরিদ্ররা হয়ে পড়েছে আরও অসহায়। জীবিকার এমন সংকট দেখা দেয়ায় নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে ঢাকা শহর ছাড়তে শুরু করেছে অনেক মানুষ। এরই মধ্যে ঢাকায় অবস্থানরত সকল ভাড়াটিয়ারা পড়েছে চরম বিপাকে। আয়-রোজগার হীন ও নিম্ন আয়ের মানুষরা এমন সমস্যার শিকার হচ্ছে বেশি। দেশের কর্মসংস্থানের বেশির ভাগ রাজধানী ঢাকা কেন্দ্রিক হওয়ায় বিভিন্ন অঞ্চলের লোকজন কাজের সন্ধানে রাজধানীমুখী হতেন। প্রতিদিনই কর্মসংস্থান বা ভাগ্য পরিবর্তনের আশায় ঢাকায় আসত মানুষ। এভাবে দেড় হাজার বর্গকিলোমিটারের এ নগরীর বাসিন্দার সংখ্যা দাঁড়িয়ে যায় প্রায় দুই কোটি, যাদের প্রায় ৮০ শতাংশই ভাড়া বাসার বাসিন্দা। এ ভাড়াটিয়ারা বছরের পর বছর বাসার উচ্চ ভাড়া দিয়ে আসছেন। কিন্তু করোনা ভাইরাস পরবর্তী পরিস্থিতি বদলে দিয়েছে বাসা ভাড়ার চিত্রও। করোনার কারণে অনেক মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়ছেন। আবার অনেক মানুষের শ্রেণি কাঠামোর পরিবর্তন হয়েছে। নতুন করে অনেক মানুষ হতদরিদ্র হয়েছেন, ফলে আগের ভাড়ার ভার বইতে পারছেন না তারা, ফলে ছেড়ে দিচ্ছেন বাসা। ছেড়ে দিচ্ছেন ঢাকা শহরও এবং নির্মমতার এই চিত্র যেনো ঢাকা শহরেই বেশি। কিন্তু বর্তমান সময়ের পেক্ষাপটে বাসা মালিকদের দেশের অবস্থা সম্পর্কে সব কিছু জানা সত্ত্বেও তাদের ভেতর নেই মানবিকতার বিন্দু মাত্র ছাপ। নিরূপায় হয়ে বাসা ছাড়তে হচ্ছে ভাড়াটিয়াদের।

সম্প্রতি একটি প্রতিবেদনে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) ও বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের (বিলস) এক যৌথ গবেষণায় উঠে এসেছে, করোনার কারণে এক বছরে দেশে নতুন করে দরিদ্র হয়েছে দেড় কোটি মানুষ। সিপিডির গবেষণা-বিষয়ক পরিচালক তার গবেষণাপত্রে উল্লেখ করেন, করোনা দুর্যোগের সময় ৩ শতাংশ শ্রমিক চাকরি হারিয়েছেন। শহর অঞ্চলে ইনফরমাল ইকোনমি থেকে ৬.৭৮ শতাংশ কর্মজীবী কর্মসংস্থান হারিয়েছেন। এ ছাড়া উচ্চ পর্যায়েও অনেকে চাকরি হারিয়েছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি চাকরি হারিয়েছেন এসএমই ও ইনফরমাল সেক্টর থেকে। এমন পরিস্থিতিতে ব্যয়বহুল এই রাজধানীতে লাগামহীন বাসা ভাড়া নিয়ে সংকটে পড়েন অনেক কর্মজীবী। একই সাথে বাসা ভাড়া দিতে না পেরে এরই মধ্যে রাজধানী ছেড়েছে স্বল্প ও মধ্যম আয়ের অনেক পরিবার। বর্তমানে এক হাজার ৪৬৩ দশমিক ৬০ বর্গকিলোমিটারের এই ঢাকা শহরে বসবাস করছে প্রায় দুই কোটি মানুষ। কর্মসংস্থানসহ উন্নত জীবনের প্রত্যাশায় বিপুলসংখ্যক মানুষ প্রতিনিয়ত ভিড় করছে এই শহরে। ফলে লাগামহীনভাবে বেড়েছে এই শহরের বাড়ি ভাড়া। তাই রাজধানীতে বসবাসকারীদের তাদের আয়ের অর্ধেকের বেশি ব্যয় করতে হয় বাড়ি ভাড়ায়। কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) এক পরিসংখ্যানে জানা যায়, গত ২৫ বছরে রাজধানীতে পণ্য মূল্যের তুলনায় বাড়ি ভাড়া বেড়েছে দ্বিগুণ। তাদের হিসাব অনুযায়ী গত ২৫ বছরে রাজধানীতে বাড়ি ভাড়া বেড়েছে প্রায় ৪০০ শতাংশ। একই সময়ে নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে ২০০ শতাংশ। তাদের আরেকটি পরিসংখ্যানে দেখা যায়, রাজধানীর ২৭ শতাংশ ভাড়াটিয়া আয়ের প্রায় ৩০ শতাংশ, ৫৭ শতাংশ ভাড়াটিয়া প্রায় ৫০ শতাংশ এবং ১২ শতাংশ ভাড়াটিয়া আয়ের প্রায় ৭৫ শতাংশ টাকা ব্যয় করেন তাদের বাসা ভাড়া পরিশোধে।

এই সময়ে সব থেকে বিপাকে পড়েছে কাজ হারিয়ে যাওয়া বেতন-ভাতা কমে আসা বা স্বল্প আয়ের মানুষগুলো। ফলে নিরূপায় হয়ে শহর ছেড়ে গ্রামের বাড়িতে অবস্থান করা ছাড়া আর কোনো উপায় তাদের সামনে নেই। এ তো গেলো শুধু নিম্নবিত্তের বা স্বল্প আয়ের মানুষের চিত্র, এবার শিক্ষার্থীদের কথা ভাবুন। রাজধানীতে বসবাস লাখ লাখ শিক্ষার্থীর এদের কেউ চলমান আবার অনেকেই পড়ালেখা শেষে বেকার অবস্থায় চাকরি সন্ধানে। তাদের দুরবস্থার চিত্রগুলো আরো বেশি ভয়ঙ্কর যারা মেস বা কয়েজন মিলে বাসা ভাড়া করে থাকেন।

গত ১৮ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা হওয়াতে শিক্ষার্থীরা অবস্থান নেয় গ্রামের বাড়িতে। সেই থেকে আজ পর্যন্ত এক বছরের অধিক সময় তারা বাড়িতেই অবস্থান করছেন। কিন্তু তাদের মেসে বা বাসার ভাড়া ঠিকই দিতে হচ্ছে। যা তাদের জন্য খুবই দুরূহ ব্যাপার। কেননা অনেক শিক্ষার্থীই ছিলো যারা তাদের নিজেদের খরচ টিউশনি বা অন্য কোনোভাবে নিজেরাই বহন করে চলতো। কিন্তু করোনার কারণে তাদের সেসব আয়-উপার্জন সব বন্ধ। এদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে একের পর এক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার কথা বললেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়াতে খুলেনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয় খুললেই পরীক্ষা এমন কথা শোনাতে বাসা ভাড়া টানতেই হচ্ছে। শুরুরদিকে বাসা মালিকরা কিছুটা মানবিক হলেও করোনার পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে সেই মানবিকতা শেষ হয়ে যায়। সেই থেকে পুরোপুরি ভাড়াই টানতে হচ্ছে। এই অবস্থায় ভাড়াটিয়াদের মানবিক হতে হবে।

লেখক : বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক ফোরাম

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published.

আরো খবর
© All rights reserved © 2019-2021 Bangaleer Diganta
Design and Developed by Classical IT